জলের প্রক্রিয়াকরলের মাধ্যলম আলসেক্রিক অপসারে

উপরিতলগত শোষণ প্রক্রিয়া চলাকালীন, অ্যাডসর্বেন্ট নামক কঠিন উপরিতলগত শোষণকারী মাধ্যমের সাথে আর্সেনিক সংযুক্ত হয়। আয়ন ভিত্তিক অ্যাডসর্বেন্ট এর ব্যবহার শুরু হবার আগে, আর্সেনিক অপসারণ করার জন্য প্রাথমিক ভাবে সক্রিয় অ্যালুমিনা ব্যবহার করা হত। স্বল্প মাত্রার কার্যকারিতা ও দ্রবীভূত অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষতিকারক চরিত্রের জন্য, এই বিষয়ে আজকাল এটির আর কোনও সক্রিয় ভূমিকা নেই।

পানীয় জল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আর্সেনিক অপসারণ করার জন্য আয়রন-হাইড্রক্সাইডগুলিকে উপরিতলগত শোষক উপাদান হিসাবে ব্যবহার করাই হল বর্তমানে উপলব্ধ সবচেয়ে ভালো প্রযুক্তি। এগুলির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল উপরিতলগত শোষণ ফিলটার ব্যবহারের সরলতা ও নিরাপত্তা এবং আর্সেনিক এমন এক মাত্রা পর্যন্ত অপসারণ করার ক্ষমতা যেটা শনাক্তকরণের সীমার চেয়েও কম। তাছাড়া, এর কার্যপ্রক্রিয়ায় কোনো বর্জ্যজলের প্রবাহ অথবা দূষিত নোংরা জল উৎপন্ন হয় না। দানাদার ফেরিক হাইড্রক্সাইড নির্বাচনশীলতা ধর্মের ফলে কেবল আর্সেনিক অপসারণ করার কাজ করে – জলের স্বাভাবিক গঠনগত উপাদান অপরিবর্তিত থাকে। এই প্রক্রিয়ায় আর্সেনেট ও আর্সেনাইট উভয়েই অপসারিত হয়।

GEH বিষয়ে আরও জানুন

প্রক্রিয়ায় সাধারণত আয়রন ও অ্যালুমিনিয়ামের লবণ ব্যবহার করতে হয়। এগুলি প্রক্রিয়াকরণ না করা জলে থিতিয়ে পড়ে আর ফিলটার করে বের করে নেওয়া হয়। দ্রবীভূত আর্সেনিক ফিলটার করার ছাকনিগুলির উপরিতলে এসে আবদ্ধ হয় আর একে জলের থেকে অপসারণ করা হয়। আর্সেনিকের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ফ্লোকুল্যান্ট দরকার হয়। এই মাত্রা নির্ধারণ করার জন্য পর্যায়ক্রমিক বিশ্লেষণ অবশ্যই করতে হবে। ফিলটার করা নোংরা জলকে পরবর্তীকালে প্রক্রিয়াকরণ করা হয় এবং স্থানীয় নিয়ম অনুসারে আর্সেনিকের পরিমাণ অনুসারে শেষ পর্যন্ত সেখানেই অথবা বিশেষ বর্জ্য হিসাবে জমা করে রাখা হয়। এই প্রক্রিয়ায় যে উচ্চ মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় সেই কথা ভাবলে, খুব বড় প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টের জন্য এটা এক বিশেষ আগ্রহ জাগানোর মতো বিকল্প।

যে ধরনের সামগ্রী দরকার তার উপর নির্ভর করে, আয়ন বিনিময় প্রক্রিয়ায় অ্যানায়ন বা ক্যাটায়নগুলিকে অপসারণ করা যায় তবে একই আধান বিশিষ্ট অন্য ধরনের আয়ন জলের সাথে মিশে যায়। আর্সেনিক যতক্ষণ জলে আর্সেনেট আকারে উপস্থিত থাকে, এর মধ্যে আধান থাকে আর তাই তত্ত্বগত ভাবে একে আয়ন বিনিময় প্রক্রিয়ায় অপসারণ করা সম্ভব; অথচ আর্সেনেটকে অপসারণ করা যায়। আর্সেনেটের সীমিত মাত্রার নির্বাচনশীলতা ধর্ম থাকে, অবশ্য, ব্যবহারিক দিক থেকে দেখলে এর সক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে কম। এক ব্যবহারিক মাত্রার সময় পর্যন্ত একে জমা করে রাখার মেয়াদ অর্জন করার জন্য, এগুলিকে তাই পুনরুৎপাদন করতে হয়। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন যে বিষাক্ত দ্রবণগুলি পুনরুৎপন্ন হয়, সেগুলিকে পরবর্তীকালে প্রক্রিয়াকরণ করতে হয়। তাই, ব্যবহারিক দিক থেকে দেখলে, আয়ন বিনিময় প্রক্রিয়া আর্সেনিক দূরীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।

অর্ধভেদ্য পর্দা ব্যবহার প্রক্রিয়ায়, উচ্চ চাপে জলের মধ্যে থাকা পদার্থগুলিকে তাদের আকার অনুসারে এবং অর্ধভেদ্য পর্দার উপাদানের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমেও অপসারণ করা যায়। নিরাপদে আর্সেনিক অপসারণ করতে হলে, ঘন অর্ধভেদ্য পর্দা যেমন ন্যানোফিলট্রেশন বা বিপরীতমুখী অভিস্রবণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে, জলে থাকা আর্সেনিক সহ অন্যান্য যৌগ যেগুলি অর্ধভেদ্য পর্দার মধ্য দিয়ে যেতে পারে না, তাদেরকে আলাদা করে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। প্রক্রিয়াকরণ না করা জলের লবণাক্ততা এই প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে দূর করা হয়। এই উচ্চ মাত্রায় আর্সেনিফেরাস থাকা নর্দমার জলের প্রবাহকে এরপর প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এই অ-নির্বাচিত অপসারণ প্রক্রিয়া কেবল আর্সেনিকের অপসারণ ঘটায় না, জলে উপস্থিত খনিজ পদার্থের গঠনগত উপাদান বদলে দেয়, যেটা জলটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার উপর নির্ভর করে কাঙ্ক্ষিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত হতে পারে।